বাংলাদেশের সাথে চালু হয়েছে ইতালির সরাসরি কন্টেইনার শিপিং রুট। সোমবার ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ বেলা পৌনে তিনটার দিকে ৯৫২ কি ইউএস প্রতিটি ২০ ফুট দৈর্ঘ্যের কন্টেইনার ভর্তি পণ্য নিয়ে বাংলাদেশ-ইতালি রুটের প্রথম সরাসরি কনটেইনার জাহাজ “এমভি সোঙ্গা চিতা” ইতালির রাভেনা বন্দরের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম বন্দর ছেড়েছে। বলা যায়, এটি বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি এবং আন্তর্জাতিক সমুদ্র বাণিজ্যের একটি উল্লেখযোগ্য অধ্যায়।
আর্লি-স্টার সম্পাদনা ডেস্ক:
চট্টগ্রাম বন্দর থেকে রপ্তানী পণ্য নিয়ে এটিই হচ্ছে প্রথম জাহাজ, যা ইউরোপের কোন দেশে পণ্য পরিবহনের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দর চট্টগ্রামের জেটিতে ভিড়েছিল। এটি লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী একটি জাহাজ। ইতালিসহ ইউরোপের কয়েকজন ক্রেতার আগ্রহেই মূলত চট্টগ্রাম-ইতালি সরাসরি কন্টেইনার শিপিং রুট বা জাহাজ চলাচল সেবা চালু হয়েছে। ইতালির ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার কোম্পানি, আরআইএফ লাইন ও এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান ক্যালিপসো কোম্পানিয়া ডি নেভিগেশনের যৌথ প্রচেষ্টায় তা সম্ভব হয়েছে।

গত শনিবার জাহাজটি ৯৪৫ ইউএস খালি কন্টেনার ও ক্যাপিটাল মেশিনারি ভর্তি সাত টিইইউএস কন্টেইনারসহ চট্টগ্রাম বন্দরে যায় এবং ফেরার পথে নিয়ে আসে ৯৫২ টিইইউএস কন্টেইনার। জাহাজটি ১৫-১৬ দিনে ইতালির রেভেনা বন্দরে এসে পৌঁছার কথা রয়েছে। কন্টেইনারে থাকা পণ্যের ৯৮ শতাংশই হচ্ছে তৈরি পোশাক। এর মধ্যে রয়েছে ইতালির ক্রেতাদের পাশাপাশি ইউরোপের কয়েকটি দেশের ক্রেতাদের অর্ডারকৃত তৈরি পোশাক।
শিপিংয়ের সময় ৪৫ দিনের পরিবর্তে ১৫-১৬ দিনে করা হবে এর ফলে নতুন এই ব্যবস্থায় পরিবহন খরচ ৪৫ থেকে ৫০ শতাংশ কম হবে বলে আশা করা হচ্ছে। রপ্তানিকারকদেরকে সিঙ্গাপুর কিংবা শ্রীলংকার বন্দর ব্যবহার করে মার্কিন এবং ইউরোপীয় বাজারে বাংলাদেশি রপ্তানিযোগ্য পণ্য পাঠাতে হতো যার জন্য প্রচুর সময়ের প্রয়োজন হত এবং পরিবহন খরচও হত অনেক বেশি।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত এনরিকো নুনজিয়াটা ৬ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজটি পরিদর্শন করেন। তাঁরা এটিকে বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন দিগন্তের সূচনা বলে উল্লেখ করেন। তখন বাংলাদেশ গার্মেন্ট মানুফ্যাকচারস অন্ড এক্সপোটার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) এর সভাপতি ফারুক হাসানসহ ব্যবসায়ী নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ-ইতালির সরাসরি কন্টেইনার শিপিং রুট চালু বিষয়ে ঢাকায় নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত বলেন, “ইউরোপ থেকে সরাসরি জাহাজ আসা খুব ভালো একটি পদক্ষেপ। এটি আরএমজি পণ্যের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যকে উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে তুলবে।” প্রথমবার চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সরাসরি এই যাত্রাকে যুগান্তকারী উল্লেখ করে বন্দর চেয়ারম্যান বলেন. “আশা করি এটার পর ভবিষ্যতে আরো অনেকে এগিয়ে আসবেন।”