খট খট…
দরোজার কড়া নড়ছে
অস্থির আঙুলে চলছে টুকাটুকি
– কে?- দরোজার ওপাশ থেকে আসে ভরাট কন্ঠস্বর
– স্যার, দরজাডা খুলেন। আপনের লগে কথা আছে।
তারপর ইস্পাত বুক নিয়ে স্যার এসে বাইরে দাঁড়ান
সমুন্নত তাঁর শির, দরাজগলা – ‘এই রাতে কি চাই?’
তারপর কয়েক জোড়া বুটের ধড়াম ধড়াম শব্দ
তারা স্যারের চোখ বাঁধে, পিছমোড়া করে হাত বাঁধে…
তারা স্যারকে টেনে হেঁচড়ে নিয়ে যায় বধ্যভূমিতে,
তখনো স্যার বুক ভরে সরিষা ফুলের ঘ্রাণ নেন
ভেজা বাতাস স্যারের গালে হিমেল ছোঁয়া বুলিয়ে যায়
পায়ের নিচে শিশির ভেজা মাটির স্পর্শে স্যার শিহরিত হন!
‘গাদ্দার সালো কো গোলি মারো’- আহা! পিশাচের অট্টহাসি।
তারপর স্যারের হৃদপিণ্ড ফুঁড়ে বেরিয়ে যায় কয়েকটা বুলেট
এবং বুলেটের সেই শব্দকে অতিক্রম করে একটা শ্লোগান-
‘জয় বাংলা’। তারপর…
অভিমানী কিছু দীর্ঘশ্বাস ভীড় করে মুক্ত বাতাসে; পতাকায়!
নৈশব্দে এই বধ্যভূমিতে স্যারদের কেটে যায় ৪৯ বছর!
আজো দরোজায় খট খট শব্দ হয়…
– কে?
– স্যার, দরজাডা খুলেন। আপনের লগে কথা আছে।
রফিকুল নাজিম
কবি, গল্পকার ও সম্পাদক
পলাশ,নরসিংদী।