চিত্রনায়িকা পরীমনিকে চার দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি প্রদান করেছেন আদালত। এতে সামাজিক যোগাোযগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টের মাধ্যমে ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশের আলোচিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন।
বিনোদন || আর্লি-স্টার বার্তা কক্ষ:
বৃহষ্পতিবার রাতে ঢাকা মহানগর হাকিম মামুনুর রশিদ তাকে রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন। এর আগে বুধবার রাজধানীর বনানীতে বাসায় অভিযান চালিয়ে পরীমনিকে আট করে র্যব। এরপর বিকালে বনানী থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয় তাকে। নজরুল ইসলাম রাজকেও (রাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার) আটক করা হয়।
বৃহস্পতিবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন বলেন, পরীমনির বাসায় মিনি বার রয়েছে। মদের লাইসেন্স থাকলেও মেয়াদ পেরিয়েছে অনেক আগেই। নজরুল রাজসহ পরিমণির এই চক্রটি ডিজে পার্টির আয়োজন করে বিপুল অর্থ উপার্জন করেছে বলে জানান।
পরীমনিকে আদালতে হাজির করা হবে জেনে বিকেল থেকেই আদালতের সামনে গণমাধ্যমকর্মীরা ভিড় করতে থাকেন এবং সন্ধ্যার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিও বেড়ে যায় সেখানে। এরই সাথে আইনজীবিদেরও ভিড় শুরু হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অপরাধ ও তথ্য বিভাগের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) এসআই আলমগীর হোসেন জানান, পরীমনি ও তাঁর সহযোগী আশরাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে বনানী থানায় মাদকের মামলা করা হয়েছে। এই মামলায় তাদের সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ বাংলাদেশের আলোচিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। তিনি পুলিশের রিপোর্টে লেখা কিছু বক্তব্যকে তুলে ধরে ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান।
তসলিমার দাবি, যে অপরাধগুলো দেখিয়ে পরীমণিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সেগুলো অপরাধের মধ্যে পড়ে না। তিনি বলেন, ‘সত্যিকার অপরাধ খুঁজছি। কাউকে কি জোর করে মাদক গিলিয়েছে মেয়েটি? প্রতারণা করেছে, কাউকে খুন করেছে? তিনি আরও বলেন, অপরাধ খুঁজছি। নাকি মেয়ে হওয়াটাই সবচেয়ে বড় অপরাধ?’
লেখিকা তসলিমা শুনেছিলেন, পরীমণি দরিদ্র পরিবারের মেয়ে, পরিশ্রম করে নিজের জায়গা তৈরি করেছেন ঢাকার ইন্ডাস্ট্রিতে।
তিনি বলেন, ‘মদ খাওয়া, মদ রাখা, ঘরে মিনিবার থাকা, বাড়িতে বন্ধু বান্ধব আসা, এক সঙ্গে মদ্যপান করা, বাড়িতে ডিজে পার্টি করা, কারও সাহায্য নিয়ে সিনেমায় নামা, কারও সাহায্যে মডেলিং-এ চান্স পাওয়া অপরাধ নয়। কোন উত্তেজক বড়ি যদি সে নিজে খায়, তবে তা অপরাধ নয়। লাইসেন্স নবায়নে দেরি হওয়া গুরুতর কোন অপরাধ নয়। ন্যাংটো হয়ে ছবি তোলাও অপরাধ নয়।”
আদালতে পরীমনির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত বলেন, তিনি দেশের স্বনামধন্য চিত্রনায়িকা। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া সবাই তাকে চেনে। তাঁর ক্যারিয়ার ধ্বংসের ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তিনি সম্প্রতি একটি ধর্ষণ চেষ্টার মামলা করলে ষড়যন্ত্র করে তাঁকে মাদক মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তাঁর বাসা থেকে যে মদ উদ্ধার করতে দেখানো হয়েছে, তা ছিল সাজানো।