ডিসেম্বর মাস আমাদের বিজয়ের মাস। এ মাসের প্রথম দিনের প্রথম প্রহর থেকেই আমাদের মনে অন্যরকম আনন্দের শিহরণ জাগে, যার প্রভাব পড়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম, ব্যানার, পোষ্টার, শুভেচ্ছাবাণীতে; আধুনিক যুগের ফেইসবুকও তা থেকে পিছিয়ে নেই। তবে আজ আমি বলবো আমাদের গর্ব মুক্তিযুদ্বের সাথে সম্পর্কিত বীরাঙ্গনাদের নিয়ে, যাদের ত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা।
আমাদের দেশের তরুন-তরুনীদের বীরঙ্গনা দের সঠিক ইতিহাস জানা প্রয়োজন এবং তাদের প্রতি ইতিবাচক ভাবনা থাকা উচিৎ। বীরঙ্গনারা আমাদের সমাজের বোঝা নয় কিংবা অবহেলার পাত্রীও নয়। তাদেরও ছিলো একটা সুন্দর কৈশোর ও শৈশব, ছিলো বুক ভরা স্বপ্ন কিন্তু এদেশীয় রাজাকারদের সহযোগিতায় পাকিস্তানি কিছু নরপশুরা পাশবিক অত্যাচারের মাধ্যমে হায়েনার মত ছিনিয়ে নেয় তাদের মূল্যবান সম্পদ; যার কারনে ভেঙ্গে যায় অনেক নারীর স্বপ্ন ও সাজানো সুখের সংসার। শুধু তাদের সতীত্ব কেড়ে নিয়েই তারা ক্ষান্ত হয় নি, সিগারেটের গরম অংশ দিয়ে তাদের ছ্যাকা দেওয়া হতো।
তাই স্বাধীনতার চাঁর দশক পর, আমি সবাইকে এই মহিয়সী, আত্ব-ত্যাগী নারীদের কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, যারা নিজেদের শ্রেষ্ঠ সম্পদ বিসর্জন দিয়ে রক্ষা করেছেন বাংলা মা’কে। এই বিজয়ের মাসে বীরঙ্গনাদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। তার এখনও পান নি তাদের নায্য সম্মান ও অধিকার। যদিও বর্তমান সরকার বীরঙ্গনাদের তালিকা প্রকাশ করেছে, পাচ্ছেন সরকারী ভাতা ও বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা। মুক্তিযোদ্ধাদের চাকরির ক্ষেত্রে কোটা আছে কিন্তু বীরঙ্গনাদের নেই। এছাড়া তাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য নেই কোনো জোরালো পদক্ষেপ। তাই দেশের নেতৃত্বদানকারী সকলের প্রতি অনুরোধ আসুন বীরঙ্গনাদের শেষ বয়সে তাদের সম্মান ও নায্য অধিকার ফিরিয়ে দেই।
আবু তালিব হোসাইন মিঠু
নাপলী, ইতালী।